কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী বাংলার হিন্দুসমাজের আচরণীয় ব্রতগুলির অন্তর্গত একটি ব্রত। হিন্দু প্রধানত বৈষ্ণব মতাবলম্বীরা জাগতিক মঙ্গলকামনায় এবং অশুভ-অকল্যাণ দূর করতে এই ব্রত পালন করা হয়ে থাকে। সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য দেখা যায়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। এই তিথিতেই শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয়ে থাকে। উৎসবটি প্রতি বছর ইংরাজি ক্যালেন্ডারে অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনও এক সময়ে পড়ে।
ব্রত নিয়ম : এই ব্রত সব হিন্দুরাই করতে পারবেন । ব্রতের পূর্বদিন ও ব্রতের পরদিন নিরামিষ আহার ভক্ষণ করে সংযমী হয়ে থাকতে হবে। ব্রতের আগের দিন রাত্রে ভালো মতো দাঁত মেজে নেবেন- যাতে দাঁতে খাবারের কণা না আটকে থাকে, পরদিন বারোটি কুল্লা করে মুখ ধুবেন । ব্রতের দিন উপোবাসী থেকে রাত ৮ টার পর পূজায় বসতে হবে। উপযুক্ত সময় রাত ১২ টায় । উপবাসে জল, ঔষধ, চিনি মিশ্রিত সরবত আর দুধ ছাড়া লাল চা ভিন্ন আর কিছু ভক্ষণ নিষেধ ।
সম্পূর্ণ উপবাসে অক্ষম তাহারা ফলের রস, কাঁচা দুধ আর এতেও অসমর্থ ব্যাক্তি কিছু ফলমূল খেয়ে থাকতে পারেন । ভগবানের পূজায় নারকেল নাড়ু, দই, ঘি, মধু, কাঁচা দুধ, ফলমূল, বাটার ( মাখন) বা খোয়া ক্ষীর হলেই হবে । তাল ফল লাগবেই। তালের বরা ও তালের কাঁচা রস নিবেদন করবেন, অভাবে শুধু মাত্র কাঁচা তালের রস সেটাও না থাকলে গোটা তাল ফল নিবেদন করবেন । এক আঁটি তাল, শ্বেত তাল দেবেন না । তিলক ও তুলসীমালা ধারণ করে পূজাতে বসবেন। অভাবে তুলসীতলার মাটি নিয়ে কপালে তিলক একে পূজোতে বসবেন ।
ব্রতফল: এই ব্রত পালন করলে শতজন্মের মহাপাতক থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়।