কেন পালন করা হয় ঝুলন পূর্ণিমা

হিন্দু ধর্মে ১২ মাসে তের পার্বণ। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ঝুলনযাত্রা। শ্রাবণ মাসে একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝুলন উৎসব। রাধা মাধবের ঝুলন যাত্রা হিসাবে বিখ্যাত ঝুলন উত্‍সব প্রতি বছর অত্যন্ত ধুমধাম করে পালিত হয়। রাধা-কৃষ্ণের ভক্তেরা এই বিশেষ দিন দোলনা সাজিয়ে যুগলবিগ্রহ স্থাপন করে পুজো করেন। শুধু মন্দির বা বনেদিবাড়িতে নয়, বহু হিন্দু বাড়িতেই আয়োজন করা হয় ঝুলন উত্‍সবের। ইসকন মায়াপুরে প্রতি বছর ঝুলন উত্‍সবে দেবতাদের একটি পালকিতে করে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ একটি হ্রদে নিয়ে যায় এবং যার উপর একটি বিশাল দোলনা তৈরি করা হয়।

ঝুলন পূর্ণিমাকে শ্রাবণী পূর্ণিমাও বলা হয়। বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর শৈশব-স্মৃতি, বিশেষতঃ সখা-সখীদের সাথে দোলনায় দোলার প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে দ্বাপরযুগে এই ঝুলন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। এর পরথেকে এখনো গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের এটা প্রিয় অনুষ্ঠান।

ঝুলন-যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পৃথিবীর নানা জায়গা থেকে মানুষ পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ, মায়াপুর, শান্তিপুরে ছুটে আসেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান নবদ্বীপ এবং বিশেষত মায়াপুরে যেরকমভাবে এই ঝুলন উৎসব পালিত হয় তা পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোথাও বিশেষ দেখা যায় না।

কৃষ্ণের বাল্যকাল থেকে কিশোর বয়স পর্যন্ত নানা কার্যকলাপ পুতুল দিয়ে সাজানো হয়ে থাকে যা ঝুলনের বিশেষ আকর্ষণ। ভক্তেরা বিশ্বাস করে এই ঝুলন উৎসবে রাধা-কৃষ্ণকে দোলনায় দোলালে কৃষ্ণ বেশি খুশি হয়ে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে নদীয়ার শান্তিপুরে, বরানগরের পাঠবাড়ি আশ্রমে, বউবাজারের বিখ্যাত রামকানাই অধিকারীর ঝুলনবাড়িতে ঝুলন যাত্রার উৎসব দেখার জন্য বহু দর্শক সমাগম হয়।

শ্রীকৃষ্ণের আরেক নাম পীতাম্বরধারী। ঝুলনযাত্রার দিন শ্রীকৃষ্ণকে হলুদ রঙের বস্ত্র পরান। এছাড়া ওই দিন হলুদ মিষ্টি, হলুদ রঙের ফল ও ফুল দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পুজো করুন।ময়ূরের পালক কিনতে পাওয়া যায়, ওইদিন পালক কিনে আনুন, তারপর সেটি ঠাকুরের পাশে রেখে দিন। এতে শুভফল পাবেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন