পূজায় বলিদান কি শাস্ত্রসম্মত?

মনসা পূজা, কালী পূজা এবং দূর্গা পূজা বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আরম্ভর ও বলি সহকারে পালিত হয়। আর পূজায় এই বলি প্রথা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনেক বিতর্ক।

সনাতন ধর্মে পূজা অনুষ্ঠিত হয় দুটি নিয়মে ১/ বৈদিক ২/ তান্ত্রিক। সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মের মানুষেরা শাক্ত, শৈব এবং বৈষ্ণব তিন মতের অনুসারী। এই তিন মতের মধ্যে শাক্ত ও শৈবদের বলি দানের বিধান রয়েছ। তাই ,আমরা আজ জানবো বলি ঠিক কতটা শাস্ত্রীয় বা অশাস্ত্রীয়।

শ্রী শ্রী চন্ডীতে তে দ্বাদশ অধ্যায়ের (১০, ১১, ১২) এ বলি দানের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও কালিকা মহাপুরাণ -৬৭/৬ অনুযায়ী, -বলির মাধ্যমে পশুর মু্ক্তি লাভ হয়,বলি দ্বারা স্বর্গ লাভ হয় এবং বলিদান দ্বারা রাজাগণ শত্রুকে পরাজিত করিয়া থাকে।  পাখি সকল, কচ্ছপ, মাছ, নয় প্রকার মৃগ,মহিষ,অজ,ছাগল,রুরু,শূকর,খরগ,কৃষ্ণসার,গোধিকা,শরভ,সিংহ ইত্যাদি মহাদেবী ও ভৈরবাদির পূজায় বলি প্রদান করার কথা উল্লেখ রয়েছে (কা.পু-৬৭/৩)। শ্রীভগবান বলেছেন- বৈষ্ণবীতন্ত্রকল্প কথিত ক্রমানুসারে সাধকগণ সকল প্রকার বলিদানই করবে  (কা.পু-৬৭/২)। কৃষ্ণসার মৃগ ও শূকরের রুধিরে দেবী দ্বাদশ বর্ষ তৃপ্তি লাভ করে (কা.পু-৬৭/১০)।

ভাগবত মহাপুরাণ ৩য় স্কন্ধ/ ত্রিংশোহধ্যায়/ ১৮-২০) অনুযায়ী, হে রাঘব, এক্ষণে রাবণের বিনাশার্থ এক উপায় বলছি, শ্রবণ করুন। আপনি সম্প্রতি এই আশ্বিন মাসে শ্রদ্ধান্বিত হয়ে সর্বসিদ্ধিকর নবরাত্র ব্রত অনুষ্ঠান করুন। ঐ ব্রতে নয় রাত্রি উপবাসী থেকে যথাবিধানেজপ-হোমাদি দারা জগদম্বার অর্চনা করতে হবে। ভগবতীর প্রীত্যার্থে প্রশান্ত ও পবিত্র হয়ে পশুসমূহ বলি প্রদান করে একশো জপের দশাংস হোম করলে আপনি রাবণ বিনাশে অবশ্যই সক্ষম হবেন।

মানুষের ষড়রিপুর নাশের জন্যই বলিদান দেওয়া হয়। তবে প্রকৃত বলি সেদিনই হবে যেদিন আমরা আমাদের কাম, ক্রোধ, লোভ,মোহ,মদ ও মাৎসর্য এই ষড়রিপুর নাশ করতে পারবো।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন